শরীর চর্চায়- খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা

কর্ম মানভজীনের বৈশিষ্ট্য । কাজের পাশাপাশি কিছু বিনোদন মূলক ব্যবস্থার প্রয়োজন থেকে এসেছে খেলাধুলার চর্চা । খেলাধুলা হচ্ছে শারীরিক ব্যায়াম বা পরিশ্রমের অঙ্গ । খেলাধুলা দেহ আর মনের বিকাশের জন্য সহায়তা করে থাকে । খেলাধুলার এই উপযোগিতা মানব জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে বলেই যুগ যুগ ধরে খেলাধুলার চর্চা হয়েছে এবং তার বিকাশ ঘটেছে বিচিত্র ভাবে । কাজের মধ্যে জীবনকে সীমাবদ্ধ করে রাখাই জীবনের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে কাজের গতিশীল করা প্রয়োজন । খেলাধুলা সেই প্রয়োজন সাধন করে । তাই প্রতি ব্যাক্তির জীবনে কর্মের পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।

খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা

মানুষের রুচি, শক্তি, সামরথ সামর্থ্য, সময়, উপকরণ ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে সারা দুনিয়ায় অসংখ্য খেলাধুলার উদ্ভব ঘটেছে । বিশেষ দেশ বা বিশেষ অঞ্চলে যেমন খেলাধুলা আছে, তেমনি আন্তর্জাতিক ভাবেও খেলাধুলার উন্মেষ ঘটেছে । খেলাধুলার পরিসর সংকীর্ণ গৃহকোণ থেকে বিশ্ব অলিম্পিকের মাঠ পর্যন্ত । কোনো না কোনো খেলাধুলা দেশের সীমানায় আবদ্ধ থাকে আবার কোনো কোনো খেলাধুলা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । অলিম্পিক, বিশ্বকাপ ক্রিকেট, বিশ্বকাপ ফুটবল, এশিয়ান কাপ, ইউরোপিয়ান কাপ,প্রভৃতি ক্রীয়া প্রতিযোগিতার জনপ্রিওতা জনপ্রিয়তা এখন সারা দুনিয়া জুড়ে তুঙ্গে । তাছাড়া টেবিল টেনিস, লন টেনিস, ব্যাডমিন্টন, হকি,ইত্যাদি খেলাধুলা বর্তমানে আন্তর্জাতিক ভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । বিশ্বের সকল প্রকার খেলাধুলাকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন: স্বর্ণের চেয়েও দামি যে রঙ

(১) ঘরোয়া  (২) বহির্বিভাগীয় । ঘরোয়া খেলাধুলার মধ্যে রয়েছে – তাস, দাবা, পাশা, ক্যারাম, লুডু, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, লন টেনিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । অপরপক্ষে, বহির্বিভাগীয় খেলাধুলার মধ্যে রয়েছে – হা-ডু-ডু, ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, সাঁতার, মোটর চালানো, হকি, বেসবল, দৌড় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।

ক্রিকেটকে বলা হয় খেলার রাজা । উৎসাহ, উদ্দীপনা, জনপ্রিয়তায় ক্রীয়াজগতে ক্রিকেটের স্থান সর্বচ্চো । আর এই ব্যয় -বাহুল্য ও ক্রীয়া পরিধির দীর্ঘায়িত ব্যাপ্তি একে দিয়েছে রাজকীয় খেলার মর্যাদা । ক্রিক্রেট খেলায় দর্শকবৃন্দ এবং এবং খেলোয়ারগণ অত্যন্ত উত্তেজনার মধ্যে থাকেন । কারন গৌরবময় অনিশ্চিয়তায় এই খেলায় কখন কোন অঘটন ঘটে যায় তা বলা যায় না । তাই টান তান উত্তেজনার ভেতর দিয়ে এই খেলা চলতে থাকে । আর উত্তেজনায় ভরপুর বলে ক্রিকেট খুবই প্রিয় খেলা ।

ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ড । ইংরেজদের সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনী শক্তিতে এর উদ্ভব । তাদের উৎসাহে এর বিকাশ , তাদের বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্য বিস্তারে এর প্রতিষ্ঠা । সাম্রাজ্য বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজরা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বিস্রিত করে দিয়েছিল তাদের ক্রিকেট সাম্রাজ্য । আজ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের গৌরব -সূর্য অস্তমিত, কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্রিকেটের সেই গৌরবময় ঐতিহ্য এখনো গভীর নিষ্ঠা এবং আগ্রহের সঙ্গে অনুশীলিত । ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ারের হ্যাম্পবল্ডনের ক্রিকেটের প্রথম দল গড়ে উঠে । তারপর তা ছড়িয়ে পরে ব্রিটেনে । এবং পরে আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । এক দিনের ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হয় ১৯৭১ সালে থেকে । এবং বিশ্বকাপ শুরু হয় ১৯৯৫ সাল থেকে ।

বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির পূর্ণ সদসয সদস্য – অস্টেলিয়া, দক্ষিন আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত,পাকিস্তান, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশ বর্তমানে ক্রিকেট খেলায় প্রাধান্য বিস্তার করে আছে । ইংল্যান্ড , দক্ষিন আফ্রিকা, ও নিউজিল্যান্ড ছাড়া বাকি সবকটি দেশই ক্রিকেটের সর্বচ্চো মর্যাদায় লড়াই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা লাভ করেছে । এছাড়া আইসিসির পূর্ণ সদস্য অপর দুটি দেশ জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশও এক দিনের ক্রিকেটে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইতিমধ্যে নিজেদের যোগ্যতা প্রমান করেছে ।

জেনে নিন: টমেটো’র ছোঁয়ায় ত্বক হবে দাগমুক্ত, ফর্সা ও উজ্জ্বল

খেলাধুলা কর্মচাঞ্চলের প্রতীক । ব্যাক্তি ও জাতীয় জীবনে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম । তরুণদের শরীর ও মনের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য । বর্তমানে নারী সমাজের জন্যও খেলাধুলাএ দরকার । খেলাধুলার এই গুরুত্ব বিবেচনা করে এর সযত্ন অনুশীলন এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সরকারকে বৃদ্ধি করে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *