বিশ্ব নিয়ে যা কিছুই জানি !

বিশ্ব নিয়ে যা কিছুই জানি !

বিশ্ব পুরোটাই নিয়ে আমাদের এই পৃথিবী । আর এই পৃথিবীর কোনো না কোনো জায়গায় আমরা বসবাস করি । আমরা
পৃথিবী বা বিশ্ব নিয়ে যা কিছুই জানি সবই এর মধ্যে অবস্থিত । কিন্তু যদি সমগ্র ভ্রমান্ডের সাথে তুলনা করা যায় , তবে
আমাদের এই পৃথিবী কতটা যে ছোট তা কল্পনা করা যাবে না । এই বিষয় নিয়ে অনেক জ্ঞানী-বিজ্ঞানী আলোচনাই করে
এসেছেন ।

পৃথিবীর সব থেকে বেশি কাছে হলো আমাদের চাঁদ । কেননা রাতের আকাশে চাঁদের আলোয় বুঝিয়ে দেয় যে,চাঁদ পৃথিবীর খুব নিকটে অবস্থান করে । কিন্তু বাস্তবে চাঁদটা পৃথিবীর এত কাছে নয় । চাঁদ আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৮৪,৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । আর এই দূরত্বের মধ্যে প্রায় ৩০টি পৃথিবী জায়গা করে নিতে পারবে । কিন্তু এত দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও ১২ জন মানুষ চাঁদে পা রেখেছেন । আর পৃথিবী থেকে মানুষ এতটাই দূরে আজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছেন । তাই এটা মানব সভ্যতায় এক মহানকৃতি হিসেবে গণ্য কএয়া হয় । চাঁদে দাড়িয়ে পৃথিবীকে দেখতে ছোট একটি মারবেল এর
মতো লাগে ।

আরও পড়ুন: সুখি হওয়ার উপায়

আর কেউ যদি চাঁদে অবস্থান করে পৃথিবীতে কাউকে বার্তা পাঠাতে চায় , তবে ১.২৫ অর্থাৎ আড়াই সেকেন্ড সময় লাগবে চাঁদ থেকে পৃথিবীতে প্রয়োজনীয় বার্তা পাঠাতে । কেননা আলোয় এই গতিবেগে যাতায়াত করে ।

মঙ্গল গ্রহ থেকে পৃথিবীকে দেখতে হলে , আমাদের পৃথিবীকে ছোট সাদা একটি বিন্দুর মতো মনে হবে । মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীকে ঠিক এরকমই দেখায় । মঙ্গল গ্রহ পৃথিবী থেকে প্রায় ২২৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । কিন্তু এই দূরত্ব সর্বোচ্চ ৪০১ মিলিয়ন কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে । এর অর্থ হলো যদি মানুষ কখনো সত্যি এই গ্রহে পা রাখতে পারে তবে যতটা দূরত্ব চাঁদে পা রাখা মহাকাশচারীদের পৃথিবী থেকে ছিল সেই ব্যক্তি সেই দূরত্বের প্রায় ৯৮৬ গুন বেশি দূরে থাকবে।

মঙ্গল গ্রহ থেকে পৃথিবীতে কোনো বার্তা পাঠাতে ২০ মিনিট লাগবে আলোর গতিবেগ হিসাব করলে । আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাখ্যা করলে জানতে পারি পুরো গ্যালাক্সিতে এখানে ১০০ বিলিয়ন এর বেশি নক্ষত্র এবং ১০০ বিলিয়ন এর বেশি গ্রহ রয়েছে । কিন্তু আমরা কখনও রাতের আকাশে গ্যালাক্সিতে সম্পূর্ণ উজ্জ্বল দেখতে পাবো না । কারন আমরা খালি চোখে যে তারাদের দেখতে পাই তা ৯৯ ভাগই সীমাবদ্ধ । আমাদের সমগ্র পৃথিবীতে যতগুলো বালির দানা আছে এরা এক সাথে হলেও নক্ষত্রের সংখ্যা তার চেয়ে বেশি হবে । এখন আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই দৃশ্যমান ভ্রমান্ডের বাইরে কি আছে । এতক্ষন যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেটা আসলে শুধু দৃশ্যমান ভ্রমান্ড ।

জেনে নিন: পুরো আকাশ ফাঁকা রেখে কেন নির্দিষ্ট রাস্তায় চলে প্লেন

কিন্তু এর বাইরে যে ভ্রমান্ডটি আছে সেটা আরও বিশাল আরও সুন্দর হওয়ার সম্ভাবনা আছে যা মানুষের পক্ষে কল্পনা অতীথ । আসলে আমরা জানিই না যে এর বাইরে কী আছে কেননা এই অবিশ্বাস্য দূরত্ব থেকে আলো এখনও আমাদের কাছে অর্থাৎ পৃথিবীতে এসে পৌঁছানোর সময় ভ্রমান্ড পার করতে পারি নি । আর কিছু কিছু জায়গা থেকে আলো হয়তো কখনও আমাদের কাছে এসে পৌঁছাতে পারবেনা । এর কারন হলো ভ্রমান্ডের বেশ কিছু অংশ পৃথিবী থেকে দূরে অবস্থিত । আর তার আলোর থেকে বেশি গতিবেগে বিস্থিত হচ্ছে । এর অর্থই হলো এই সমস্ত জায়গা থেকে অসিম সময় পড়ে আলো এসে পৃথিবীতে পৌঁছাবেনা ।

যদি ধরে নেওয়া হয় যে মানব সভ্যতা চিরন্তর , অর্থাৎ এর মানে এর অস্তিত্ব সব সময় থাকবে । তার সত্ত্বেও ভ্রমান্ডের অনেক জায়গা থেকে যাবে যা সম্পর্কে মানুষ জানতেই পারবেনা এবং কখনোই দেখতে পারবেনা । তাই এই দৃশ্যমান ভ্রমান্ডটি আসলে যতই প্রকান্ড হোক না কেন তা সমগ্র ভ্রমান্ডের কাছে এটা ১টা বিন্দুর থেকেও ছোট । এবার নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে , এখানে যে পৃথিবীর বসবাসকারী মানুষেরা ক্ষুদ্রের চেয়েও ক্ষুদ্রতম ।

এখন যাওয়া যাক, মহাকাশের শেষ সীমানায় । মাঝে মাঝে অনেকেই ভাবে পৃথিবীর শেষ সীমা কোথায় , বা দেখতে কেমন জায়গা । কিন্তু আমাদের পৃথিবীটা যেহেতু গোলাকার তাই পৃথিবীর শেষ প্রান্ত বলে কিছুই নেই । তবে একান্ত্যই যদি দেখতে কৌতুহল হয় তাহলে আকাশের দিকে তাকিয়েও উপলব্ধি করা যাবে । যে আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন এটাই পৃথিবীর একটি সীমানা । আর পৃথিবীর শেষ প্রান্ত খুজতে হলে অনেক রহস্য ঘেরা স্থান অতিক্রম করতে হবে ।

বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবী গোলাকার যার শেষ সীমানা কেউ কোনো দিন বের করতে পারবেনা । তবে পৃথিবী উত্তর ও দক্ষিন দিকে একটু চেপ্টা হওয়াতে ভৌতাত্তিকগণ তরলটোঙ্গা নামক একটি জায়গা আছে যাকে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত বলা হয় । এই স্থানটি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০০০ মিটার উপরে । নরওয়ের এই স্থানটি দেশটির একদম উত্তরে অবস্থিত ।

এরপর ভূমির আর কোনো অস্তিত্ব নেই । অর্থাৎ এখান থেকে যদি কেউ উওরে যেতে থাকে তাহলে সে আর ভূমির অস্তিত্ব খুজে পাবে না । সেখানে শুধু বরফ থাকবে । তাই অনেকেই এই জায়গাকে পৃথিবীর শেষ মাথা বলে থাকে । যদিও বাস্তবিক পক্ষে পৃথিবীর শেষ মাথা বলে কোন স্থান নেই । এই স্থানে প্রতিনিয়তে হাজারো পর্যটক ভীড় করে শুধুমাত্র এর মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার জন্য । তবে পৃথিবীর শেষ সীমা নিয়ে বৈজ্ঞানীকদের মতবিরোধ রয়েছে । কিছু কিছু ভৌতাত্তিকগণ মনে করেন রাশিয়ার ইয়ামালপেনিলসোলা এলাকা পৃথিবীর শেষ সীমানা ।

রাশিয়ার এই এলাকায় সৃষ্টি হওয়া রহস্যময় একটি গর্ত মানুষের মনে নানা কৌতুহলের জন্ম দিয়ে আসছে । আর সেই কারনেই রহস্য ঘেরা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত । সুতরাং পৃথিবীর শেষ সীমানা নিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানীগণ যতোই গবেষনা করুক না কেন পৃথিবীর শেষ সীমানা বলতে কিছুই খুজে পাওয়া যাবে না, কেননা আমাদের পৃথিবীটা গোলাকার ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version